রিপন হোসেন সাজু,মণিরামপুর।। জেলার অর্ন্তগত ৮টি উপজেলার মধ্যে মণিরামপুর বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলার মধ্যে অন্যতম। ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। গ্রামের সংখ্যা রয়েছে ২৪৯টি। জনসংখ্যা সাড়ে ৫ লাখের কাছাকাছি। এর আয়তন ৪৪৪.৭৩ বর্গ কিলোমিটার-যাহা দেশের বিদ্যমান একটি জেলার আয়তনের সমান। এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতি, ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণী পেশার মানুষের বসবাস। এখানে অধিকাংশ পরিবার হত-দরিদ্র হওয়ায় তাদের দু:খের শেষ নেই।
তারপরও ওই পরিবারগুলো ভালই চলছিলো।
কিন্তু সম্প্রতি দেশে মহামারী করোনা ভাইরাসের মরণব্যধি রুপ নেই। এ মরণব্যধি রোগ থেকে রক্ষা পায়নি মণিরামপুর উপজেলাবাসীও। ৬জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা সবাই সুস্থ্য আছেন। করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য সরকার লকডাউন ঘোষনা করেন।
এতে দু:চিন্তায় পড়ে মণিরামপুরে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষেরা। যাদের জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই দিন মজুরের কাজ না করলে সংসার চলে না, তাদের মুখের হাসি অম্লান হতে চলে। সেই মুখের হাসি ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিদের্শনা দেন হত-দরিদ্র গৃহবন্দি অসহায় মানুষেরা যাতে খাবারের জন্য কষ্ট না পায় সে জন্য সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
সেই নির্দেশনা মোতাবেক ওই সকল অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কিমিটির সাবেক নির্বাহী সদস্য ও যশোর সিটি প্লাজার চেয়ারম্যান এস এম ইয়াকুব আলী, মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসান।
করোনা ভাইরাস শুরু থেকে অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কিমিটির সাবেক নির্বাহী সদস্য ও যশোর সিটি প্লাজার চেয়ারম্যান এস এম ইয়াকুব আলী। বিভিন্ন মাধ্যমে এসকল অসহায় মানুষের সবসময় খোঁজ খবরও নেন তিনি। এস এম ইয়াকুব আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফীর সমন্বয়ে এ পর্যন্ত মণিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও
১টি পৌরসভায় ১ হাজার ৫’শ পরিবারকে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার ৭’শ টাকার খাদ্য সামগ্রী, মণিরামপুরে ইউএনও কর্তৃক কামালপুর-মোহনপুর গ্রামে লকডাউন ১৫ পরিবারকে ১০ হাজার ৩’শ ৩৫ টাকার খাদ্য সামগ্রী, মণিরামপুরে ইউএনও অফিসের হটলাইনে আসা ফোন কলের মাধ্যমে ৫০ পরিবারকে ১৭ হাজার ৬’শ টাকার খাদ্য সামগ্রী, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে উপজেলার শ্যামকুড়
ইউনিয়নে পুনরায় ৩’শ ৫৮ পরিবারকে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫’শ ৮৮ টাকার খাদ্য সামগ্রী, উপজেলার গোবিন্দপুর গুচ্ছ গ্রামে ৪২ পরিবারকে ১৪ হাজার ৭’শ ৮৪টাকার খাদ্য সামগ্রী, যশোর পৌরসভা মেয়রের ত্রাণ তহবিলে ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার ২ মেট্রিক টন মুসরী ডাল, যশোর পৌরসভার ০৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ত্রাণ তহবিলে ৩৬ হাজার টাকার ১ মেট্রিক টন স্বর্ণা চাল, যশোরস্থ মণিরামপুর
কল্রাণ সমিতি ত্রাণ তহবিলে নগদ ২৫ হাজার টাকা, যশোর পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ৭০ পরিবারকে ৪০ হাজার ৮’শ ৮০টাকার খাদ্য সামগ্রী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘বি’ সার্কেলের মাধ্যমে ২৬ পরিবারকে ১১ হাজার ৫০টাকার খাদ্য সামগ্রী, ডিএসবি (সার্বিক) যশোর এর ফোন কলের মাধ্যমে ৫০ পরিবারকে ১৮ হাজার ৭’শ টাকার খাদ্য সামগ্রী, পুলিশের উপস্থিতিতে এস এম ইয়াকুব আলীর বাস ভবন যশোর বকচর এলাকায় পর পর দুইদিন ১’শ
৮০ পরিবারকে ১লক্ষ ১৫ হাজার ১’শ ২০ টাকার খাদ্য সামগ্রী ও নগদ ১০ হাজার টাকা বিতরণ, মুড়লী যশোর এলাকায় ৬০ পরিবারকে ২৭ হাজার ৯’শ ৬০টাকার খাদ্য সামগ্রী, সর্বমোট এস এম ইয়াকুব আলী ১২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭’শ ১৭ টাকার খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মত মহৎ কাজের জন্য এলাকার হত-দরিদ্র ও বৃদ্ধ অসহায় নর-নারী তার জন্য প্রতিনিয়তই দু’হাত তুলে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার জন্য দোয়া করছেন।
অপরদিকে, মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমই বসে নেই। তিনিও সাধারণ মানুষের পাশে থেকে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। করোনা ভাইরাস শুরু থেকে সরকারী ভাবে এবং ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তা ছাড়া তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে জীবাণু নাশক কক্ষ স্থাপন করেছেন।অন্যদিকে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী।
তিনি করোনা মোকাবেলায় প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় স্বেচ্ছা সেবকরা কাজ করছেন। তিনিও সরকারী ভাবে উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফীর কর্মগুনে সম্প্রতি তিনি বাগেরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাস অক্রান্ত চার ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২৪জন রোগীকে সুস্থ্য করে মানবসেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও মণিরামপুরের কৃতি সন্তান ডা. মেহেদী হাসান হাসান। তা ছাড়া একই পরিবারে ৭ জনের মধ্যে ৬ জন করোনা পজেটিভ হওয়ায় পরিবারটি দু:চিন্তায় পড়ে। অবশেষে ওই পরিবারটিকে দু:চিন্তার হাত থেকে বাঁচালেন ডা. মেহেদী হাসান।
অসুস্থ্য রোগীরা তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে সব সময় যোগাযোগ করেন এবং তার পরামর্শে সবাই এখন সুস্থ্য আছেন। বর্তমান সময়ে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস এর মহামারীর কারনে সারা বাংলাদেশের প্রায় চিকিৎসকগণ যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তখনও জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্বেও নিরলসভাবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে প্রানপন চেষ্টা করে যাচ্ছে ডা. মেহেদী হাসান।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যে চারজন মণিরামপুরবাসীর গর্ব হয়ে উঠেছেন। মানুষ-মানুষের জন্য, এ কথাটি আবারও প্রমান করলেন তারা।